আমের মিষ্টি স্বাদ এবং বহুমুখী ব্যবহার বহু যুগ ধরে মানুষের মন জয় করে আসছে। বিশ্ব ইতিহাসেও আমের স্থান রয়েছে, কারণ অনেক বিখ্যাত মানুষ এই ফলের প্রতি মুগ্ধ হয়েছেন। আমাদের দেশে আমের বহু জাতের চাষ হয়, যা আমাদের সংস্কৃতির একটি বিশেষ অংশ।

১. আম: জাতীয় ফল ও গাছ

আম ভারত, পাকিস্তান, এবং ফিলিপাইন এই তিনটি দেশের জাতীয় ফল হিসেবে স্বীকৃত। এছাড়াও, বাংলাদেশে আম গাছকে জাতীয় গাছ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

২. আম উৎপাদনের বিশ্ব রেকর্ড

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি আম উৎপাদন হয় ভারতে, যেখানে বছরে প্রায় ২৫ মিলিয়ন টন আম উৎপাদন হয়। ইন্দোনেশিয়া এবং চীন এই তালিকায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

৩. বিশ্বের প্রাচীনতম আম গাছ

মধ্য ভারতের খানদেশ এলাকায় বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো আম গাছটি রয়েছে, যার বয়স প্রায় ৩০০ বছর। আজও এই গাছে ফল ধরে।

৪. আমের স্বাদ

আমের স্বাদ নির্ভর করে এতে থাকা রাসায়নিক উপাদানগুলোর উপর, যেমন টারপিন, ফিউরানোন, ল্যাকটোন এবং অ্যাস্টার।

৫. বিশ্বের সবচেয়ে বড় আম

২০০৯ সালে ফিলিপাইনের একটি বাগানে উৎপাদিত সবচেয়ে বড় আমটির ওজন ছিল প্রায় সাড়ে তিন কেজি এবং দৈর্ঘ্য ছিল এক ফুট। এটি গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পেয়েছে।

৬. বৌদ্ধ ধর্মে আম গাছের মাহাত্ম্য

বৌদ্ধ ধর্মে আম গাছকে পবিত্র মনে করা হয়, কারণ বলা হয় গৌতম বুদ্ধ আম গাছের নিচে ধ্যান করেছিলেন।

৭. মোগল সাম্রাজ্যে আম

মোগল সাম্রাজ্যে আমের চাষ শুধুমাত্র রাজ পরিবারের বাগানেই করা হতো। সম্রাট শাহজাহানের আমলের পর রাজ পরিবারের বাইরে আমের চাষ করার অনুমতি দেওয়া হয়।

৮. ভালোবাসার প্রতীক

ভারতে ঝুড়ি ভর্তি আম উপহার দেয়া ভালোবাসা এবং বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়।

৯. পর্তুগিজদের আমের চাষ

পর্তুগিজরা প্রথম ভারতে আমের চাষ শুরু করে এবং বিভিন্ন দেশে এর বীজ ছড়িয়ে দেয়। এর মাধ্যমেই আমের উৎপাদন বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে শুরু হয়।

১০. ‘ম্যাঙ্গো’ নামের উৎস

দক্ষিণ ভারতের তামিল ভাষায় আমকে প্রথমে ‘আম-কায়’ নামে ডাকা হতো, যা পরে ‘মাঙ্গা’ নামে পরিচিতি পায়। পর্তুগিজরা এই নামকে পরিবর্তন করে ‘ম্যাঙ্গো’ নামকরণ করে, যা বিশ্বব্যাপী পরিচিত।

আমের ইতিহাস এবং এর প্রতি মানুষের ভালোবাসা বহুকাল ধরে চলমান। এই মিষ্টি ফল কেবল খাবার হিসেবে নয়, বরং সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক দিক থেকেও বিশেষ স্থান দখল করে আছে।